আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
১৫ জেলার জন্য আমদানি করা প্রায় ২০ হাজার টন নন ইউরিয়া (পটাশ ও এমওপি) সার রাখা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে। বিএডিসির গুদামে জায়গা না থাকায় খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদার। তবে পরিত্যক্ত চাতালের মাঠ ও খোলা আকাশের নিচে সার রাখায় এর গুণগত মান বজায় থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দলের দাবি, যে প্রক্রিয়ায় সার সংরক্ষণ করা হয়েছে তাতে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে সারে বৃষ্টির পানি ঢুকলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি জাহাজ দিয়ে এসব সার আমদানিকারকের মাধ্যমে আশুগঞ্জ নদীবন্দরে পৌঁছায়। বিভিন্ন জেলার চাহিদা অনুসারে এসব সার স্থানীয় পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্ধারিত জেলায় (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ) পরিবহন করে বিএডিসির গুদামে সংরক্ষণের কথা রয়েছে। কিন্তু এসব জেলার বিএডিসির গুদামগুলোতে ধারণ ক্ষমতার বেশি সার থাকায় মহাসড়কের পাশে আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর, কামাউরা, সোহাগপুর এলাকার ছয়টি স্থানে স্তূপাকারে রাখা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে এ উপজেলার নোমান ট্রেডার্স, আসিফ পরিবহন, রাকিব পরিবহন ও মালেক অ্যান্ড সন্স নামে চারটি পরিবহন ঠিকাদার এসব জেলায় সার পরিবহনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের জাহাজ থেকে সার আনলোড করে নির্ধারিত জেলার বিএডিসির গুদামে পৌঁছানোর কথা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’জন ডিলারের দাবি, সার ভালোভাবে ঢেকে রাখলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে যেভাবে সার রাখা হয়েছে, তাতে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
খোলা জায়গায় রাখা সারের গুণগত মান বজায় থাকবে কিনা- এমন প্রশ্ন ওঠায় একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি তা পরিদর্শন করেছে।
পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স রাকিব পরিবহনের স্বত্বাধিকারী মো. নাসির মিয়া ও মালেক অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মো. শাহজাদা সাজু জানান, বিএডিসির গুদামে জায়গা না থাকায় সার বুঝিয়ে দিতে পারছেন না তাঁরা। বিএডিসি ও কৃষি বিভাগের নির্দেশমতো সার খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে। যত দ্রুত সার বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারবেন, তত ভালো। তাদের কাছে সার থাকলে নিরাপত্তা, সংরক্ষণসহ নানা ধরনের চাপের মধ্যে থাকতে হয়।
বিএডিসির কুমিল্লা অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, আপৎকালীন সময় সংকট নিরসনের জন্য সারের মজুত বাড়ানো হয়েছে। গুদামে জায়গা না থাকায় এসব সার ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এতে সারের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি অবগত রয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা এসব সার মনিটর করছে।
দীর্ঘ সময় থাকলে ও বৃষ্টির পানি ঢুকলে সার নষ্ট হওয়ায় আশঙ্কার কথা জানিয়ে মো. মুজিবুর রহমান আরও বলেন, আপৎকালে সার সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ করা প্রয়োজন।