শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪



কুষ্টিয়ার স্কুলশিক্ষিকা ফুপুকে হত্যা করেন মাদক ও জুয়ায় আসক্ত ভাতিজা : পুলিশ


আলোকিত সময় :
08.11.2022

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মাদক ও জুয়ার টাকার জন্য কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা রোকসানা খানমকে (৫২) তার ভাতিজা নওরোজ কবির ওরফে নিশাত (১৯) হত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। সোমবার রাতে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নওরোজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দীন।

সোমবার রাতে নিহত রোকসানার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে নওরোজের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে গতকাল রাত ১২ টার দিকে শহরের হাউজিং এলাকা থেকে নওরোজকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব ও পিবিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করে। ডিবির ওসি নাসির উদ্দীন বলেন, রোকসানার বাড়ির চারতলায় নওরোজ তার মা ও ভাই নিয়ে থাকতেন। ওই বাড়ির অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোকসানার বাড়িতে নওরোজ নিয়মিত আসা–যাওয়া করতেন। তাৎক্ষণিকভাবে হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে নওরোজকে আটক করা হয়।

নাসির উদ্দীন বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় নওরোজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। নওরোজের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, রোকসানা নিঃসন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই নওরোজকে ছেলের মতো আদর করতেন। ২০১৩ সালের নওরোজের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে রোকসানা নওরোজের দেখভাল করতেন। নওরোজ মাদকে আসক্ত বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি অনলাইন জুয়ার সঙ্গেও জড়িত। এ জন্য তিনি প্রায়ই রোকসানার কাছ থেকে টাকা নিতেন। মাদক ও জুয়া খেলার টাকা জোগান দিতে সম্প্রতি নওরোজ তার ফুফুর কিনে দেওয়া মোটরসাইকেলও বিক্রি করে দেন।

সম্প্রতি রোকসানা নওরোজকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং বকাঝকা করেন। এতে নওরোজ ক্ষিপ্ত হয়ে রোকসানাকে মারার পরিকল্পনা করেন। গত শনিবার রাতে রোকসানা ছাদের ফুলবাগানে পানি দিতে যান। এ সময় রোকসানার ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে কৌশলে প্রবেশ করে লুকিয়ে থাকেন নওরোজ। রোকসানা ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে গেলে রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘর থেকে শিল-পাটার শিল নিয়ে ঘুমন্ত রোকসানাকে মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে রোকসানার মৃত্যু হয়। গতকাল রাতে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিলটি বাড়ির লিফটের পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে রোকসানার লাশ দাফন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নওরোজকে আদালতে নেওয়া হবে।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি