শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • প্রচ্ছদ » রাজনীতি » বিএনপির গণসমাবেশের নির্বিঘ্ন আয়োজনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ



বিএনপির গণসমাবেশের নির্বিঘ্ন আয়োজনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ


আলোকিত সময় :
28.11.2022

আলোকিত সময় ডেস্ক :

রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে কেউ যেন পরিবহন ধর্মঘট ডাকতে না পারে, সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আগামী ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই সম্মেলন মঞ্চ ও প্যান্ডেল সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বিএনপির গণসমাবেশের নির্বিঘ্ন আয়োজনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পূর্বঘোষিত ৮ ডিসেম্বর থেকে দু’দিন এগিয়ে আনা হয়েছে।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে নির্বিঘ্নে গণসমাবেশ অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গণসমাবেশ ঘিরে কেউ যেন কোনো ধরনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকতে না পারে, সে বিষয়েও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের বিষয়ে সরকারের এমন নমনীয় অবস্থানের পরও বিএনপির সংশয়ের অবসান হচ্ছে না। এটা সরকারের কোনো ‘রাজনৈতিক কৌশলের অংশ’ কিনা সে নিয়ে সন্দেহ করছেন দলটির নেতারা। তাঁরা বলছেন, কৌশলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে যাতে গণসমাবেশ করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই সরকার এমন ফাঁদ পাততে পারে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলীয় ফোরামে আলোচনার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

এর আগে বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে বাধাগ্রস্ত করতে পরিকল্পিত পরিবহন ধর্মঘট ডাকার অভিযোগ উঠেছিল। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার বিভাগীয় গণসমাবেশ বাদে সব গণসমাবেশের আগেই এমন পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিভাগীয় গণসমাবেশের কর্মসূচি থাকলেও ১ ডিসেম্বর থেকে সেখানেও পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এই অবস্থায় ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘট না ডাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা এলো।

আওয়ামী লীগের এমন সিদ্ধান্তের পরও বিএনপির হাইকমান্ড এখনও নয়াপল্টনে তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করার বিষয়ে অনড়। সরকারের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করলেও বিএনপি তাতে রাজি নয়। বরং সরকারের এই সিদ্ধান্তে আরও সন্দেহ বাড়ছে। এসব বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে চুলচেরা বিশ্নেষণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি।

গতকাল রোববার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু বিএনপি একটি অজুহাত দেখাচ্ছে, ৮ তারিখে ছাত্রলীগের সম্মেলন, কী করে তারা ১০ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে? আজকে সে জন্য প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সম্মেলন ৬ ডিসেম্বর নিয়ে এসেছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আমরা এখনও নয়াপল্টনে গণসমাবেশ করার পক্ষে রয়েছি। আমাদের জানানোর পর দলীয় ফোরামে এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বিএনপির বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে তারা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। এ রকম একটি সমাবেশ করার জন্য তারা পছন্দের জায়গা হিসেবে এরই মধ্যে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের স্থান উল্লেখ করে আবেদন করেছে। এর আগেও একই স্থানে সমাবেশ-গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেও লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটেছিল। তবে এখন কেন নয়াপল্টনে না দিয়ে প্রশাসন তাদের পছন্দের জায়গা নির্ধারণ করছে ? প্রশাসনের যেমন নিরাপত্তার বিষয় আছে বিএনপিরও তেমনি নিজ দলের নেতাকর্মীর নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। সমাবেশে আগত নেতাকর্মীর আসা-যাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেই নয়াপল্টনে সমাবেশ করার পক্ষে বিএনপি।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম জানান, তাঁরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করার জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করেছেন। প্রশাসন থেকে যেভাবে বলা হচ্ছে- বিএনপির সমাবেশে অনেক বেশি লোকসমাগম হবে, নয়াপল্টনে জায়গার সংকুলান হবে না। এসব বলার মানে কী ? তাদের এ বিষয়ে চিন্তা করতে বলা হয়নি। বিএনপির সমাবেশে কত লোক হবে, কেমন হবে তাদের সেটা বলার দায়িত্ব নয়। তাদের দায়িত্ব, বিএনপির সমাবেশ যাতে নির্বিঘ্নে হয় তার তদারকি করা।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি