
সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের আজ ৮৭তম জন্মদিন বার্ষিকী। জীবদ্দশায় দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কবিতা, গান, নাটক, গল্প-উপন্যাস, চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনাসহ সাহিত্য ও শিল্পের বিচিত্র ভুবনে কাজ করেছেন। সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল বিচরণই এই মানুষটিকে এনে দিয়েছে সব্যসাচী উপাধী।
১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম। তার জন্মদিন উপলক্ষে কবির সমাধিস্থল ঘিরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী ‘সৈয়দ হক মেলা ২০২২’। এছাড়াও ঢাকায় এবং পৈতৃক নিবাস কুড়িগ্রামেও বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
সৈয়দ শামসুল হক স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক ইউসুফ আলমগীর জানিয়েছেন, কবির জন্মদিন উপলক্ষে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পূর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মেলায় লেখক ও কবি সম্মেলন, স্বরচিত সাহিত্য পাঠ, সৈয়দ হকের লেখা কবিতা পাঠ, সৈয়দ হকের আলোকচিত্র প্রদর্শন, কবির লেখা সংগীত পরিবেশন ও দিনভর বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, সবশেষে রাতে কবির জন্মদিনকে বর্ণিল করতে ৮৭টি ফানুস উড়ানো হবে। সে সময় তার লেখা বিখ্যাত গান ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে টুস’ গানটি পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট শিল্পীগণ। এছাড়াও সৈয়দ হকের জন্মদিন উপলক্ষে লিটলম্যাগ ‘মেঠোজন’-এর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ হবে এই দিনে।
কবির একমাত্র পুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হক জানান, কুড়িগ্রামে এবার একদিনের জন্য সৈয়দ হক মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা আগামীতে এই মেলাটির ব্যাপ্তি আরও বাড়বে। তিন থেকে সাতদিন মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিলে কবি সৈয়দ শামসুল হককে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে পরীক্ষায় তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দেয়।
চার মাস চিকিৎসার পর ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ (১২ আশ্বিন ১৪২৩ বঙ্গাব্দ) ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার (১২ আশ্বিন ১৪২৩ বঙ্গাব্দ) চ্যানেল আই টেলিভিশনের তেজগাঁও চত্বরে সকাল ১০টায় প্রথম দফা জানাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দুপুর ২টায় দ্বিতীয় জানাজা এবং বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়।