শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪



রাঙ্গুনিয়া গুমাইবিলে গণ বিজ্ঞপ্তি জারী ও সরকারী খাস জমি উদ্ধার


আলোকিত সময় :
01.02.2023

মুবিন বিন সোলাইমান, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :

ধানের গোলাখ্যাত গুমাইবিল চট্টগ্রামের শস্য ভান্ডার হিসেবে সুপরিচিত। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর, হোসনাবাদ,স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, লালানগর ইউনিয়নসহ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড এবং নিশ্চিন্তাপুর পাহাড়ের পাদদেশে চন্দ্রঘোনা পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। এই বিলে মোট আবাদি জমির পরিমান ২ হাজার ৪ শত হেক্টরেরও অধিক। প্রচলিত ধারণামতে এই বিল সমগ্র বাংলাদেশের আড়াই (২ থেকে ১/২) দিনের ধানের যোগান দেয়। উৎপাদন নির্ভর অর্থনীতিতে বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, বিলে বাড়ী-ঘর দোকানসহ যত্রতত্র বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এ প্রবণতাকে রোধ করতে উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি কঠোর প্রদেক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী বিগত ২ মাসে এ ধরণের প্রায় ৩টি বসতঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করেছে ইতোমধ্যে। এছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন সময় গুমাই বিলে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা সমূহ উচ্ছেদ করেছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব নু-এমং মার্মা মং এর নেতৃত্বে গুমাই বিলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

আলাপকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, গুমাই বিল রাঙ্গুনিয়ার ঐতিহ্য এবং একই সাথে সম্পদ। যে কোন মূল্যে গুমাই বিল রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ২০০১ এবং রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইন ১৯৫০ অনুযায়ী শ্রেণি পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন। যেহেতু গুমাই বিলের জমি নাল শ্রেণির তাই আইনত এ শ্রেণি অপরিবর্তনীয় রাখার বাধ্যবাধকতা আছে। ফসলের আবাদ বাড়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসন রয়েছে। সামগ্রিক দিক বিবেচনায় গুমাই বিল রাক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

তিনি আরো জানান, প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানে  সাধারণ রাঙ্গুনিয়াবাসী সম্পৃক্ত এবং তারা এটাকে গুমাই বিল রক্ষার আন্দোলন হিসেবে দেখতে চান।

গুমাইবিল পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সমগ্র গুমাইবিলে শ্রেণি পরিবর্তন করে গুমাই বিলে কোন স্থাপনা না করতে গণ বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। এবং মাইকিং করে তা সকলকে জানিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম।

এছাড়াও গত ৩১শে জানুয়ারি (মঙ্গলবার)২০২৩ইং তারিখে মরিয়ম নগর ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড মাইজপাড়া খেলার ও জানাযার মাঠ এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে আনুমানিক প্রায় ৩০ শতকের অধিক সরকারী খাস জমি উদ্ধার এবং অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জামশেদুল আলম বলেন, উক্ত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজিং কার্যক্রমের স্তুপকৃত বালু  কর্নফুলী নদীর তীরে রাখার ফলে সৃষ্ট বালু চরে একই এলাকার প্রায়ত অন্ধমনি ছেলে আইয়ুব মাঝি , প্রায়ত ছুর মুহাম্মদ ছেলে আকতার হোসেন, প্রায়ত আমির সোবহান করিম ছেলে আহম্মদ কবীর (বালু ব্যবসায়ী) প্রায়ত আমির সোবহান করিম, প্রায়ত মাহমদ ছেলে শাহ আলম, প্রায়ত খায়েজ আহাম্মদ ছেলে ইকবাল ও সাবানী’র দখল থেকে উক্ত জমি উদ্ধার করা হয় এবং কিছু স্থাপনা তাতক্ষনিকভাবে উচ্ছেদকরা হয়। এবং অবশিষ্ট স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি