শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • প্রচ্ছদ » Lead » পাহাড়ে গ্যাসের সন্ধানে পেট্রোবাংলা



পাহাড়ে গ্যাসের সন্ধানে পেট্রোবাংলা


আলোকিত সময় :
04.02.2023

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :

নানা কারণে দিন দিন গ্যাসের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় দেশি উৎস থেকে গ্যাসের জোগান বাড়ানোয় মনোযোগী হয়ে উঠেছে সরকার। গতানুগতিক পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সন্ধান চালানো হচ্ছে। সেই অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এবার পাহাড়ে গ্যাসের খোঁজে নামতে তোড়জোড় শুরু করেছে পেট্রোবাংলা।

গত এক দশকে অবশ্য দুবার পাহাড়ে গ্যাসের অনুসন্ধান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে কোনোবারই অনুসন্ধানকাজ বেশি দূর এগোয়নি।

এবারের উদ্যোগ সম্পর্কে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) একটি সূত্র জানিয়েছে, পার্বত্য এলাকায় ১০টি সুনির্দষ্ট ‘স্ট্রাকচার’ চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ‘স্ট্রাকচারে’ তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)’। মূলত স্থলভাগের গ্যাস ব্লকের ‘২২-এ’ এবং ‘২২-বি’তে প্রায় ১০টি এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্টের (পিএসসি) আদলে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে পাবর্ত্য এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করছে পেট্রোবাংলা। ইতোমধ্যে পাবর্ত্য চট্টগ্রামে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে বিদেশি কয়েকটি কোম্পানি। ‘ইওআই’ বা ‘আগ্রহপত্র’ যাচাই করে পাঁচটি কোম্পানিকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় (শর্ট লিস্ট) রাখা হয়েছে। এগুলো হলো- অস্ট্রোলিয়ার ইনগাজ এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড; চীন ও হংকংভিত্তিক কোম্পানি এমআইই হোল্ডিং করপোরেশন; দুবাই, ইরাক ও চীনভিত্তিক কোম্পানি পেট্রো চায়না এফজেডই/চায়না ন্যাশনাল অয়েল এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি; ভারত ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি ইনভেনিয়ার এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড ও ভারতের অ্যাডভেন্ট অয়েল ফিল্ড সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড।

বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূয়াছড়ি, সারডেং-সাবতাং, সিসাক, গোবামুড়া-কামুপাড়, চাংগুতাং, বরকল, বেলাছড়ি, গিলাছড়ি, বান্দরবান ও মাতামহুরি- এই দশটি ‘স্টাকচারে’ গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হবে। অল্প সময়ের মধ্যে এসব এলাকায় কাজ শুরু করতে চায় বাপেক্স। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তুলতে গ্যাসের দাম বাড়ানোসহ নানা প্রস্তাব দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের যেসব এলাকায় তেল-গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব এলাকায় জোড়ালো অনুসন্ধানের নির্দেশ রয়েছে। পেট্রোবাংলাকে মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা সফলতাও পেতে শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ভোলার একটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘আমরা দ্রততম সময়ের মধ্যেই পাবর্ত্য এলাকায় গ্যাসের অনুসন্ধানকাজ শুরু করব।’

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, পার্বত্য এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে জোড় দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা পেট্রোবাংলায় জমা দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন পেলেই পাহাড়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হবে।

এ অনুসন্ধান কীভাবে করা হবে বা কারা করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির (আইওসি) মাধ্যমে অনুসন্ধান চালানো হবে। বাপেক্স বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পিএসসির আদলে চুক্তি করবে। সে লক্ষ্যে পেট্রোবাংলা কাজ করছে। এখানে বাপেক্সের তেমন বিনিয়োগ করতে হবে না; বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগ করবে। চুক্তি অনুযায়ী বাপেক্স লাভের অংশ পাবে। তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করছে। ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হলে জ্বালানি মন্ত্রণালয় বৈঠক করে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, পাবর্ত্য এলাকায় তেমন অনুসন্ধান চালানো হয়নি। আমাদের ধারণা, পাবর্ত্য এলাকায় বিপুল গ্যাসের আধার রয়েছে। সেখানে অনুসন্ধান চালালে ভালো ফল পাবে বাংলাদেশ। যদিও পাহাড়ে অনুসন্ধানে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।



এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি