নিজস্ব প্রতিবেদক :
আবাসন ব্যবসায়ীদের ২০২১ সালের দাম অনুযায়ী বারিধারা আবাসিক এলাকায় কাঠাপ্রতি জায়গার দাম সবচেয়ে বেশি। এখানে প্রতি কাঠা জায়গার মূল্য গড়ে ধরা হয়েছে সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর বাণিজ্যিক এলাকায় জায়গার দাম বেশি মতিঝিলের। সাব-রেজিস্ট্রারের সবশেষ ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী মতিঝিলের জমি কাঠাপ্রতি দুই কোটি ৭৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৫ টাকা। তবে সাব-রেজিস্ট্রারের মূল্য এবং বর্তমান বাজারমূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক।
আবাসন ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, আবাসিক এলাকায় প্লটের দাম সবচেয়ে বেশি বারিধারায়। এ এলাকায় কাঠাপ্রতি গড় জমির দাম সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা ২০২০ সালে ছিল ৬ কোটি টাকা। আর জমির দামের দ্বিতীয় অবস্থানে গুলশান। এ এলাকায় কাঠাপ্রতি জমির দাম ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ধানমন্ডি এলাকায় কাঠাপ্রতি ৫ কোটি ৫০ লাখ, বনানী ৪ কোটি, লালমাটিয়ায় ৩ কোটি ৫০ লাখ, মতিঝিলে ২ কোটি ৫০ লাখ, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে ২ কোটি, মোহাম্মদপুরে ১ কোটি ৫৫ লাখ, আজিমপুর ও শান্তিনগরে ১ কোটি ৫০ লাখ, উত্তরা ও শ্যামলীতে ১ কোটি, মিরপুরে ৮০ লাখ, গেন্ডারিয়া ও বাসাবোয় ৭৫ লাখ, কল্যাণপুরে ৭০ লাখ, বাড্ডায় ৬০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে সবশেষ ২০২২ সালের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মৌজাভিত্তিক দর অনুযায়ী মতিঝিলের এক কাঠা জমির দাম (বাড়ি) ২ কোটি ৩১ লাখ ৮ হাজার ৫৮০ টাকা। খালি জায়গা মানে ভিটির কাঠাপ্রতি দাম ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা। আর বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি বরাদ্দ বা হস্তান্তর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৫ টাকা। সাধারণ জমির বাজারমূল্যে মতিঝিলের পর সবচেয়ে বেশি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে কারওয়ান বাজারের জমির। কারওয়ান বাজারের প্রতি কাঠা জমির বাজারমূল্য ১ কোটি ৪৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭৫ টাকা।
তবে আবাসন খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নির্ধারিত বাজারমূল্য এবং সাব-রেজিস্ট্রারের বাজারমূল্যের চাইতে অনেক বেশি দামে জমি কেনাবেচা হচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে, ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও নিবন্ধন খরচ বেশি হওয়ার কারণে এসব এলাকায় এখন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দরে জমি কেনাবেচা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)-এর সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, সরকারি মূল্য অনুযায়ী জমির দাম বেশি। জমি নিবন্ধন খরচও অনেক বেশি। বর্তমানে জমি নিবন্ধন খরচ ১১ শতাংশের ওপরে। প্রতিবেশী দেশগুলোয় যেখানে নিবন্ধন খরচ ৩ শতাংশের মতো সে তুলনায় আমাদের নিবন্ধন খরচ অনেক বেশি। কেনার সময় জমি নিবন্ধন করতে গিয়েই বড় অঙ্কের টাকা চলে যায়।
জমির রেট শিডিউল হালনাগাদের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছিলাম জমি থেকে রাস্তার দূরত্বভেদে দাম নির্ধারণ করার। আশা করব, রেট শিডিউলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
জমির মূল্য নির্ধারণের বিষয়গুলো এরই মধ্যে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর বোর্ডসভায় অনুমোদিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ সমন্বয় বৈঠক হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। মূল্য নির্ধারণে খসড়া হয়েছে, এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের কাজ চলমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রেট শিডিউল হালনাগাদ করে তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সরবরাহ করা হবে।